চুল পড়া বন্ধের ঘরোয়া উপায় । Home remedies to stop hair loss. Health Tips


অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, যে চুল দিন দিন পড়ে গেলে কী করবেন?

আমি আপনাকে এমন দশটি খাবারের কথা বলব যা চুলকে ঘন মজবুত করতে সাহায্য করে এবং তারপর বলব কোন তেল এবং ভিটামিন ট্যাবলেট নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

আপনার চুলের যত্ন নেওয়ার সঠিক উপায় এবং আধুনিক চিকিত্সা সম্পর্কে পরামর্শ নিন.

  1. বাদাম: বাদাম যেমন চিনা বাদাম, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, বলনাট এগুলোতে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। বিশেষ করে ওমেগা সিক্স প্যাক, যা চুলের গোড়া সতেজ রাখতে, আর চুল লম্বা করতে সাহায্য করে। এই ওমেগা সিক্স প্যাক আমাদের শরীর নিজে থেকে তৈরি করতে পারে না।  খাবার থেকে নিতে হয়। এটার অভাবে মাথার চুল পড়ে যায় চুলের রং হালকা হয়ে যায় তাই প্রতিদিনের নাস্তায় কিছু বাদাম রাখতে পারেন তবে অনেক পরিমাণে খাবেন না তাহলে ওজন বেড়ে যেতে পারে 
  2. হলুদ আর কমলা রঙের সবজি এবং ফলমূল: যেমন মিষ্টি আলু, গাজর,আম, পেপে, মিষ্টি কুমড়া এগুলো ভিটামিন এ-তে ভরপুর। চুলের ফলিকল , অর্থাৎ গোড়া যেখান থেকে চুল বড় হয় সেটা ঠিক মতো কাজ করার জন্য দরকার ভিটামিন এ. আর সেটার খুব ভালো উৎস হলো এই হলুদ আর কমলা রঙের ফল এবং সবজি। দিনে যতখানি ভিটামিন দরকার, আধা কাপ গাজরে তার অর্ধেকের বেশি হয়ে যায়। তাই দিনে কিছু হলুদ সবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  3. তৈলাক্ত মাছ: প্রচলিত একটা ধারণা আছে যে ওমেগা-থ্রি তাদের জন্য সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে। যেমন টুর্না সামেন তবে আমাদের দেশী মাছ , যেমন ইলিশ কই মলা চাপিলা এগুলো ওমেগা-থ্রি ফ্যাট আছে। আমি গবেষণায় লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিব আপনার যেই মাছ সুবিধা হয় সেই মাছ খাবে এগুলো চুল ঘন করতে সাহায্য করে সাথে প্রোটিনের ভালো উৎস। 
  4. ডিম: সুন্দর চুলের জন্য ডিম আপনার খুব ভালো বন্ধু। কেন বুঝিয়ে বলি , আমাদের চুল শর্করা বা ফ্যাটের তৈরি না । চুল প্রায় পুরোটাই প্রোটিনের তৈরী আর আমরা গবেষণা থেকে নিশ্চিত জানি যে খাবারে প্রোটিন এর অভাব হলে চুল পড়ে যায়। কিন্তু আমাদের অনেকেই খাবার যথেষ্ট পরিমান প্রোটিন থাকে না। কারণ আমরা সাধারণত ভাত টাই বেশি খাই। তাই সুন্দর চুলের জন্য খাবারের তালিকায় ডিম রাখবেন। আরো কিছু বোনাস আছে যেমন বায়োটিন, সেলেনিয়াম ভিটামিন বি ১২ ইত্যাদি এগুলো চুল ঘন কালো ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।

  5. পালংশাক: চুলের উপকারের পালংশাক একটা চমৎকার খাবার। এতে চারটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আছে। যা চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায়, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন এই সবগুলোই ঘন কালো সুন্দর চুলের জন্য প্রয়োজন, 
  6. ডাল: সুন্দর চুলের জন্য ডাল খুব উপকারী, ডালে প্রোটিন আছে। ভালো পরিমাণে আয়রন আছে। আর আয়রন আমাদের মাথার তালুতে রক্ত সরবরাহ করে চুলের গোড়ায় অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে। আমরা গবেষণা থেকে নিশ্চিত জানি যে আয়রনের অভাবে চুল পড়ে। সুন্দর চুলের জন্য ডালে আরো কিছু বোনাস আছে. যেমন যেমন জিঙ্ক ফলেট খুব পাতলা ডাল নাকি ঘন করে রান্না ডাল খেলে এই পুষ্টি উপাদানগুলো বেশি করে পাবেন.


  7. বিভিন্ন ধরনের বীজ, যেমন চিয়া সিডস মিষ্টি কুমড়ার বিচি সূর্যমুখীর বিচি এগুলোতে সুন্দর চুলের জন্য অনেকগুলো চমৎকার উপাদান আছে , যেমন চিয়া সিডস আছে প্রচুর পরিমাণে আলফা লিনোলেনিক এসিড। এক প্রকারের ওমেগা-থ্রি ফ্যাট, কুমড়ার বিচি আছে জিংক , সূর্যমুখী বিচি বায়োটিন, তিসির বিজি আছে সেলেনিয়াম , গবেষণায় চুল পরার সাথে এগুলোর অভাবের সম্পর্ক পাওয়া গেছে, সিডস কিভাবে খেতে পারেন ? ভাত খাওয়ার সময় তরকারি উপর একটি বিচি দিতে পারেন. রাতে টকদই অল্প দুধের সাথে চিয়া সিড মাখিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন সকালে কিছু ফলের সাথে খেয়ে নিলেন.
  8. ছোলা , ছোলাই চুলের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে। আয়রন জিংক এবং প্রোটিন এই তিনটার যেকোনো ভাবে চুল পড়তে পারে, তাই চুল সুন্দর করতে মাঝে মাঝেই খাবারের ছোলা রাখতে পারেন ।
  9. টক দই , এইটা প্রোটিনের আরেকটা উৎস সাথে চুলের জন্য উপকারী আরো কিছু উপাদান আছে যেমন জিংক। প্রোটিনের জন্য মুরগির মাংস ভালো খাবার ।
  10. টক ফল, যেমন কমলা মাল্টা লেবু কিউই ফল এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে , সুন্দর চুলের জন্য ভিটামিন সি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন সি এর অভাবে চুল এমন বেঁকিয়ে পিছিয়ে যায় মেডিকেলের ভাষায় এটাকে বলে কক্স ক্রও হেয়ার আবার ভিটামিন সি এর অভাব হলে শরীরে আয়রন শোষণ করতে পারে না ফলে চুল পরে যাই .শরীর নিজে থেকেভিটামিন সি বানাতে পারে না তবে টকজাতীয় ফল খেলে সহজে সেখান থেকে ভিটামিন সি নিয়ে নিতে পারে. যেমন একটা কমলা থেকেই দিনের প্রায় 80% চাহিদা পূরণ হয়ে যায়. একটু কম খেতে পারেন তাদের জন্য টমেটো পেয়ারা এই ফলগুলো ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস হতে পারে . 

এই 10 প্রকার খাবার ভেতর থেকে চুলে পুষ্টি দিবে এখন বাইরে থেকে পুষি দেয়ার জন্য কি ব্যবহার করতে পারেন এমন পাম্পকিন সিড অয়েল বা কদুর তেল । চুল পড়ে যাছে এমন রোগীদের ওপর একটা গবেষণায় দেখা গেছে যে এই তেলটা তিন মাস ব্যবহার করার পরে তাদের নতুন করে চুল গজিয়েছে।

আগের থেকে মোটা হয়েছে. তাই কদুর তেল ব্যবহার করে দেখতে পারেন. আপনার যে কোন ব্রান্ডের কদুর তেল ব্যবহার করতে পারেন তাতে চুল পড়া থাকাতে সাহায্য হতে পারে. এখন আসি চুল পড়া থাকাতে কোন ভিটামিন ট্যাবলেট কার্যকর. বাজারে বিক্রি হয় অনেক চমকপ্রদ কথাবার্তা লেখা থাকে সেগুলোতে তবে বেশির ভাগেরই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই অযথা টাকার অপচয়. চুলের জন্য বেশিভাগ পুষ্টি উপাদান আলাদা ট্যাবলেটের স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে আসলেই ভাল হয় তবে এক্ষেত্রে একটা ব্যতিক্রম আছে সেটা হল ভিটামিন ডি, খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া খুব কঠিন ,ভিটামিন ডি সহজ উপায় রোদে সময় কাটানো কিন্তু যাদের পক্ষে সম্ভব না তারা আলাদা করে ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খেতে পারেন, ভিটামিন ডি একটু সতর্ক থাকবেন, কারন অতিরিক্ত ট্যাবলেট নিলেও চুল পড়তে পারে, যেমন অতিরিক্ত ভিটামিন ই ট্যাবলেট এর ফলে চুল পড়ে যায় কিন্তু.


হলুদ রঙের সবজি খেলে শরীর যতই ভিটামিন এ ঢোকার না কেন তাতে ক্ষতি নাই এখন বলব চুলের যত্নে কমন কিছু ভুল নিয়ে অনেকে শ্যাম্পু ব্যবহারের পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করেন না এইটা চুলের জন্য ক্ষতিকর কারণ টা বুঝিয়ে বলি আমাদের চুল ভালো থাকার জন্য কিছু তেল দরকার হয় যে মাথার তালু থেকে এমনিতেই আসে কিন্তু আমরা যখন শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে তেল তাও ধুয়ে চলে যায় কন্ডিশনারের কাজ হচ্ছে তেলুগুলো আবার তুলে ফেরত দেয়া তাই প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর চুলে কন্ডিশনার লাগাবেন 2 ভেজা চুল ঘষে ঘষে মুছবেন না আমরা অনেকেই গোসল করে তোয়ালে দিয়ে ঘষে ঘষে চুল মুছলে নষ্ট হয় এমন না করে তোয়ালে দিয়ে আস্তে আস্তে চাপ দিয়ে দিয়ে পানি বের করবেন 3 ভেজা চুল আঁচড়াবেন এতে চুল চুল কোঁকড়া না হলে একটু শুকিয়ে যাবার পর চওড়া দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন, 4 ব্লু ডাইয়ার বা কলিং আয়রন দিয়ে চুল শুকাবেন না। চুল বাতাসে শুকিয়ে নেয়ার সবচেয়ে ভালো তবে যদিব্লু ডাইয়ার বা কলিং আয়রন ব্যবহার করতেই হয় তাহলে সবচেয়ে কম হিটে ব্যবহার করবেন যত অল্প সময় ধরে করা যায় সপ্তাহে একবারের বেশি ব্যবহার না করার চেষ্টা করবেন 5, খুব টাইট করে চুল বাঁধবেন না যারা খুব টাইট করে চুল বেঁধে রাখেন এর কারণে চুল পড়তে পারে এটাকে বলে ট্রাকশন এলোপেসিয়া শেষে বলছি চুল পড়ার চিকিৎসা কিছু রোগের কারণে চুল পড়তে পারে যেমন থাইরয়েডের, রক্তশূন্যতা আপনি যদি খাবার দাবার ঠিক থাকে চুলের যত্ন নিচ্ছেন ঠিকমত তাও অনেক চুল পড়ে তাহলে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবে তিনি খতিয়ে দেখতে পারবেন কোনো রোগের কারণে এমন হচ্ছে কিনা রোগ ধরা পড়লে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করা যাবে চুল পড়তে থাকে আর একটা অন্যতম কারণ হলো অ্যানড্রোজেনিক অ্যালোপিসিয়ার নামের একটা রোগ এ রোগে ছেলেদের মাথায় সাধারণত টাক পড়া শুরু করে কপালের দুপাশ থেকে চুল টাক হতে পারে মেয়েদের সাধারণ তাক হয় না কিন্তু চুল পাতলা হয়ে যায় মাথায় সিতি বড় হয়ে যায় এই দুই ক্ষেত্রেই চিকিৎসা আছে দুইটা ওষুদ খুব ভালো কাজ করে ওষুধ গুলোর নাম হল মিনোক্সিডিল ফিনাস্টেরাইড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন. তিনি দেখতে পারবেন আপনার এই রোগটা হয়েছে কিনা এবং কোন ওষুধের ভালো হতে পারে এছাড়াও আরো কিছু উন্নত চিকিৎসা দেশে হচ্ছে যেমন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট অর্থাৎ মাথার পেছন থেকে চুলের সামনে বসানো তারপর পিআরপি থেরাপি কেউ কেউ কেউ উপকার পাচ্ছেন অর্থাৎ চুলপড়ার অনেক ধরণের চিকিৎসা আছে একজন ডার্মাটোলজিস্ট স্কিনের ডাক্তারের কাছে গেলে তারা চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন.

Next Post Previous Post
1 Comments
  • Anonymous
    Anonymous January 4, 2023 at 6:37 AM

    good tips bro

Add Comment
comment url